শুক্রবার, ৩০ নভেম্বর, ২০১২

তাওহীদ

আসুক না ঝড় যত
আল্লাহ ছাড়া কাহারো নিকট করবনা মাথা নত।
আমি তা'গুত কে করি না ভয়
হোক না তা'গুত শক্তিশালী, হোক যত দুর্জয়।
মুরতাদ যত নাস্তিক যত- বিত্তশালীর দল
আমিও বলছি ঈশ্বর আমাকে করেনি'ক দুর্বল।
সাবধান হও! সাবধান করি বস্তুবাদী যারা
কর্ম কভু ক্লান্ত হবে না মোদের মৃত্যু ছাড়া।


দৈন্যতা কে বলি শিল্প আমার মৌনতা কে বলি পুঁজি
বিশ্বাস আমাকে শক্ত করেছে যাচিতে আমার রুজি।
বলি শোন্‌ মোর দয়াময়-
অন্তর হতে মুছে দাও তুমি সকল জীবের ভয়।

রবিবার, ২৫ নভেম্বর, ২০১২

আমি জানি

বলিবার ভাষা নাই-
অপ্রত্যাশিত দুর্বার অগ্নি; পুড়ে গেছে খড়-কুটা।
অপরাধি আমি।পুরো আকাশ ছিল মেঘে ঢাকা।
সূর্যের সামান্য আলো মেঘের আড়ালে; তাই দেখা।
শত বারণ। আমি করতে পারিনি নিবারণ।
কথা না হোক, হবে দেখা- একটু হেস।
সেকি উৎফুল্ল হাসি! আড়াল করো না যেন।
এতকিছু কেন জান? আমি জানি, আমি জানি।
ভেবে নাও পাগলামি।
পাগলামি নয়। সে কারণ-
আমি জানি। আমি জানি।

শুভ বসন্ত

তোমার সোনালী সকাল- বিন্দু বিন্দু শিশির
তোমার ঝলসানো রোদ- সমাপ্তি নিশির।
তোমার আগমন যেন- পাখির গান
তুমি মৃত এ ধরার আরেক প্রাণ।
তুমি জানাতে এলে জাগ-
তুমি বলে গেলে-
এসেছে ফাল্গুন, যৌবন তোমার-মনে স্বপ্ন দাগ।

প্রতিদিনই কেন বলো

তুমি প্রতিদিনই কেন বলো- তুমি আমাকে ভালোবাস?
তুমি একদিন বলো- তুমি আমাকে ঘৃণা করোনা।
তুমি প্রতিদিনই কেন বলো- আমি সুন্দর?
তুমি একদিন বলো- আমি অসুন্দর না।
তুমি প্রতিদিনই কেন বলো- আমার সাথে আছ?
তুমি অন্তত একদিন বলো- তুমি আমাকে ছেড়ে যাবেনা।

তুমি প্রতিদিন কেন আমার প্রশংসা করো?
তুমি বলো- কখনো আমার দোষগুলো অন্যের কাছে তুলে ধরবেনা।
আমি জানি- আমি মানুষ।

থাকতেই পারে কিছু দোষ।
শুধু পাশে থেকে সেই দোষগুলো মুছে ফেল।
তবেই তুমি আমার ভালো বন্ধু। শুভাকাংখী।

ওদের আরজি

ওগো প্রভু দয়াময়!
ওদের আরজি তোমার কাছে করিতেও লাগে ভয়!!

একই রক্ত আমদের কেন? রঙ কেন তার লাল?
পৃথিবী যদি ওদের দিয়েছ! মোরা কেন জঙ্গাল!!
আমাদের দিতে আরেকটা গ্রহ; মরুময়, আঁকাবাঁকা।
দুর্গম হোক; দুর্জয় হোক- যেত যদি শুধু থাকা!
সুশ্রী ওরা, সুন্দর ওরা- ওরা বেশী গুনময়
সবকিছু কেন ওরা পেলনা'ক! কেন তুমি নির্দয়!!
ওদের আছে অট্রালিকা; বাকি সব ভুড়ি ভুড়ি
মোদের কেন এনেছ গো তুমি? কোথা থেকে তবে কুড়ি!

ওরা করেনা'ক তোমাকে প্রভু- একটুখানিও ভয়
মৃত্যু কখনো ছুঁবেনা'ক ওদের- হবেনা'ক ওরা লয়।

বুনো হায়েনা

আমি বলে দিব আজ সব-
অসহায় আমি সম্বল হারা অভুক্ত দুর্বল।
আমি বলে দিব ওরা ভুল পথে হাটে
বেশ্যাবৃত্তিই পেশা ওদের; মিথ্যা চোখের জল-
ওরা বুনো হায়েনার দল।।

নেশার সাগরে ডুবে আছে ওরা
অসাড়ে চঞ্চল।
প্রভাত আসলেই চলে যাবে ওরা!
মিথ্যে কথা। জনারন্য নয়-

এটা পৃথিবীর ভূগর্ভে লুকে থাকা ভূইঘর।
ওরা মানুষ নয়। মাংসাসী-
আলেয়ার মাঝে ঢেকে রাখা প্রবল সর্বনাশী।
তৃষ্ণা মিটাতে প্রসাব করে পান!
নহে জল।
এ এক কঠিন সত্য কষ্টে বলা-
ওরা বুনো হায়েনার দল।।

ছেয়ে গেছে আমাদের মুক্ত আকাশ
মেঘাচ্ছন্ন আজ
মুছে ফেল তোমার সকল অশ্রু
ঘুচে ফেল সব লাজ।
মুখ ফুটে বলো- ভীতু নয় মোরা
মোরা নয় দুর্বল।
মিথ্যাকে আজ টুটাতে আসেছি
ছুটাতে এসেছি ছল।
ধবংস করেছে মানবতা ওরা-
বুনো হায়েনার দল।।

অসম্ভব ভালোলাগে তোমায়

অসম্ভব ভালোলাগে তোমায়-
তোমার কিচির মিচির কথা।
যখন দূর থেকে তোমায় দেখি-
ভাবি তুমিই আমার সখা।
কাউকে বলিনি! আমাকেই বলি-
জানো ত? তুমি আমার অস্তিত্ব-
হৃদয়ে পাশে রাখা আছে; যেখানে
টিক্‌ টিক্‌ করে শব্দ বাজে।
যখন আমি একাকীত্ব অনুভব করি-
যখন আমার ভীষণ খারাপ লাগে।

ভাবি তুমি আছ। ছায়ার মত।
পাশা-পাশি। কাছা-কাছি।
তোমার কিলবিল করে হেটে চলা
মৃদু পদে পথ।
ছন্দ তোলে আমার হৃদয়ে
যেখানে প্রতিটি নিঃশ্বাস-
স্পন্দন তোলে আর
বার বার তোমার কথা মনে করে দেয়।
আমি বলবনা আমি ভালোবাসি।
আমি কাদবনা। চোখের জল-
আড়াল করে বলব-
ফিরে এসো যদি চাও।
যদি ভালোলাগে আমায়।
অথবা ভালো থেক।
যদি আমাকে ছেড়েই ভালো থাকা যায়।
আমি তোমার প্রেমিক না।
আমি তোমার শুভাকাংখী।

সোনার মানুষ

বয়সে আর কী আসে যায় মন যদি হয় ভালো
মানুষ যখন সোনা; হোক না বেজায় কালো।
দাঁতগুলো তার নাইবা থাকুক সোহাগ যদি জানে-
খাঁটি মনের প্রেমিক হলে সবকিছু হার মানে।
না থাক তাহার নাকের নোলক, কানে সোনার দুল-
তাহার কাছে শিখবে অনেক, ভাংবে তোমার ভুল।
সত্যি বলি মানুষ বেজায়- রূপকে করে ভুল-
রূপের চেয়েও অনেক দামি রক্ষে যদি কূল।
রক্ত-মাংস এসব দিয়েই গড়া তাহার দেহ
ভাবছ কেন মিছে তবে লজ্জা দিলে কেহ।

তুমি আসবে

তুমি আসবে বলে রাত্রি ছিলাম জেগে
তুমি আসবে বলে ভুলে গেছি সব! ডাকলো আমায় কে যে?
তুমি আসবে বলে চাঁদ দেখিনি- ছুঁইনি আমি গোলাপ-
তুমি আসবে বলে জানেলা খুলে বকছি আমি প্রলাপ।
তুমি আসবে বলে আলো না জেলে আধাঁরেই আমি আছি-
তুমি আসবে বলে মেঘ কেটেছে, ছুটছে বাদলগাছি।
তুমি আসবে বলে সূর্য দেখ মেলছে কেমন আলো-
তুমি আসবে বলে দিনটা আছে আজকে অনেক ভালো।
তুমি আসবে বলে নীরব আমি একেলা আছি বসে -
তুমি আসবে বলে সকালটা আজ কাটছে আমার রসে।
তুমি আসবে বলে মনটা খুশি- আনন্দটা ভার-
তুমি আসবে বলে বেজায় আছি অনেক মজা তার।

এখনো জীবিত আছি

ধংস হয়ে যাক আমার পৃথিবী
ক্ষয়ে ক্ষয়ে নিঃশেষ হয়ে
বিলুপ্ত হোক বিষকাঁটায়।
হারানোর শোকে কাতর আমি।
শেষ বিন্দুর সমাপ্তির অপেক্ষায়-
চাতক পাখির মতন।
উহঃ শব্দের আওয়াজ কানে আসে না।
প্রতিকূলতার আঘাতে আঘাতে
বড় ক্লান্ত এখন।

টর্নেড সাইক্লোন সব নিয়ে গেছে
ফেলে গেছে আমার জীবন্ত লাশ।
উর্বরতা খেয়ে গেছে বিষক্রিয়া
উজ্জলতা আধাঁরে ঢাকা।
ক্রিয়াক্ষম ধমনী নিষ্প্রাণ- থেমে গেছে।
নিশ্চল আমার কর্মের চাকা।
বহুদিন অপেক্ষারত মৃত্যু দেখব বলে।
যমদূত ফেলে গেছে সামান্য কৃপা-
এখনো জীবিত আছি।

শনিবার, ২৪ নভেম্বর, ২০১২

মন কি চায়

মাগো! আমার কিছুই লাগে না ভালো।
সবকিছু যেন পাল্টে গেছে- আরো বেশি জমকালো।
কেউ বুঝেনা মন কি যে চায়। তোমার আছে কি জানা?
কিছু যদি চাই মন থেকে- মাগো করবে না ত মানা?
মাগো! তোমার কি এমন হত?
যখন তুমি আরো ছোট ছিলে- বয়সে আমার মত!

দুচোখ বন্ধ- ঘুম নেই চোখে; খোলা রাখি জানেলা।
শুনি ত কতই প্রাণের শব্দ; লাগে কেন একেলা?
রাত শেষে কখন প্রভাত আসবে মনে মনে তাই ভাবি-
তখনই আমি বেশি ভালো ছিলাম- যখন ছিল না দাবি।
আজকের দিন, আজকের ক্ষণ- বড় বেশি কষ্টকর
আজকাল বড় একা একা লাগে, বুক করে ধড়ফড়।
অজানা আকুতি বিনয় করে, ডেকে যায় বারবার
জানিনা বুঝিনা এত জ্বালা কেন? এত কেন হাহাকার?
বুঝতে পারিনা মনকে আমার, বলেনা সে তো কিছু
না বলা কথাকে জানতে চেয়ে ছুটি তার পিছু পিছু।
মন তো আমার স্বর্গ চায় না, খুঁজেনা'ত সে হেম
তবে কি ভাবব, মন চায় কোন প্রেয়সী নারীর প্রেম!

কে তুমি

কে তুমি দুরের পাখি? কালের অবক্ষয়-
সাগর সিন্ধ ভেদ করে তবে আমাকে করিতে জয়।
আমি নিজেই সংকিত-
জয়ের স্বপ্ন দেখিনা আমি; আজ পরাজিত।

ক্লান্ত আমি; তৃষ্ণার্ত- এক ফোঁটা জল দাও
বিনিময়ে যদি প্রাণ চাও দিব; আরো যদি কিছু চাও!
ঘুম ঘুম চোখে সামান্য নেশা; তন্দ্রা কেটেছে আজ
বিস্তর পৃথিবী; বিশাল রাজ্যে ভেঙ্গে পড়েছে বাজ।
সম্রাজ্য তোমার এক সাগর; স্বপ্নের পাটাতন
তাই বলে কেন তরি ডুবালে; ভেঙ্গে দিলে এই মন?
অসীম দিগন্ত; কূলে যেতে হবে; আমি একা আর তরী-
শেষ সম্বল; আমি ছাড়া আর নেই কিছু ভুরি ভুরি।
 
দয়া করো মোরে, করুণা ভিক্ষা চাই
যেতে হবে তীরে একটু আশায়, খানিক বাঁচতে ভাই।
পথ চেয়ে আছে কতেক আমার, আমি যার শেষ আশা
ওরা যে পারেনা বলতে কথা, বুঝাতে মনের ভাষা।

আজ ফিরে যাও

ভেবনা'ক ভুলে গেছি! ভুলবনা আমি-
ফিরে ফিরে এসে; কিছু ভালোবেসে-
দূর থেকে দেখে; আমি ভাবি-
তুমিই আমার অনামিকা। বহু দামি।



জানা নেই কবেকার?
ভুলে যাওয়া আবদার!
কবে বলা? কবে শেষ তুমি-
মুখ ফিরে; একা আমি।

দূরত্ব বহু বাড়িয়াছে তব সনে-
তাই তব পড়েনা'ক মনে।
আমি সুধাই- সম্মুখে যারে পাই-
কেবা আছে সেই জনে।

তব সনে হলোনা'ক দেখা-
তাই আজ ভুলেছি গো সখা।
আজ তাই আসেনা'ক মনে-
তোমাদের ফেলে যাওয়া লেখা।


তোমাদের গেয়ে যাওয়া গান
আজ তার ভুলেছি গো সুর
নতুনের সাথে হলো পরিচয়
তাই তুমি আজ বহুদুর।

তোমাদের কথা ভুলেছি গো সব
যেটুক রয়েছে বাঁকি
স্বরণে রাখিব সদা মোর মনে
আর তব দিবনা'ক ফাঁকি।

তব সনে হল দেখা পথে
আমার এই শেষ বেলা রথে।
দেখা কভু হবে না'ক আর
আমার এই শেষ বেলা...শেষের দিদার।
মনে রাখা হবেনা'ক জানি
আমার এই পথ চলাখানি।
তব পথ সবে এই শুরু
আমার বিদায় বেলা...আঁচকানো ভুরু।


নেই কোনো আবদার-
শুধু বলবো অতীত ভুলে- মুখ তুলে চাও!
বারেক ফিরিয়া- আঁখি তুলে বলো
আজ নয়! আজ ফিরে যাও।

মঙ্গলবার, ২০ নভেম্বর, ২০১২

কিছু

কিছু কথা ছিল- চাপা পড়ে আছে
হয়নি তোমায় বলা।
কিছু ব্যথা ছিল- আঘাত সয়েছি
জানায়নি কত জ্বালা।

কিছু দিন ছিল- হতাশ আমি
কেউ দেখেনি গ্লানি।
কিছু রাত ছিল- আকাশ দেখছি
জানবেনা তবু জানি।

কিছু লেখা ছিল- জীবন পাতায়
কালিমার মাঝে ডুবে।
কিছু আশা ছিল- জানবেনা লোকে
বুক পেতে থাকি তবে।

কিছু হাসি ছিল- কষ্টে হেসেছি
কেউ কিছু ভাবে তাই।
কিছু জল ছিল- অশ্রু হয়েছে
শুকেছে অবহেলায়।

কিছু চাওয়া ছিল- অনেক চেয়েছি
ফিরেছি রিক্ত হাতে।
কিছু পাওয়া ছিল- দূরে ঠেলে তবু
মিলেছে আমার সাথে।

কিছু সুখ ছিল- আনন্দ ভরা
দেয়নি কেউই ভাগ।
কিছু দুঃখ ছিল- প্রিয় জন হতে
হয়ে গেছে অনুরাগ।

শুক্রবার, ২ নভেম্বর, ২০১২

পাপস্বপ্ন

আমায় জ্বালাস-
নাই যদি থাকে তোর কাজ।
মরে মরে কেন অকাজ খুঁজিয়া
কর স্বপ্নের অভিলাস।

বলি মিথ্যে স্বপ্ন নয়
যত পার কর- মর আর মার
পথিকের দুর্জয়।
স্বপ্ন পাপ, স্বপ্ন মিথ্যে মর
ক্ষুধার রাজ্যে খা

জ্যোৎস্না গায়ে মাখ- আনন্দ কর
ভুলেও চোখ দিস্‌ না।

মরণে ক্ষুধা, জীবনের ক্ষুধা
যত ক্ষুধা আছে তোর
খাবি খা গোপনে- নিশির আঁধারে
চলে যাবি হলে ভোর।
কেউ নাহি যেন জানে!
নিশির আঁধারে ঢাকা পড়ে থাকা
নিশি স্বপ্নের মানে।

পাপ বলে সব চক্ষুলজ্জা
ঈশ্বর এখানে নেই!
চোখ ফাঁকি দিয়ে- যাও সব নিয়ে
জীবন মানে এই।
জানে না'ক ওরা- জীবনের বাঁকি মানে
এই সত্যের ইতিকথা কি
মনে হয় কেউ না জানে।

বন্ধুত্ব

তুই কি জানিস চাই কি আমি
মন থেকে তা কত?
আমার সকল শুষ্ক হাসির
আড়াল করা ক্ষত?
দেখতে কি পাস কান্না আমার
অশ্রু বিসর্জন?
এসব কিছু দেখতে হলে
চাই যে মহৎ মন।
তুই দেখেছিস আমার হাসি
নীরব সমর্থন

জানিস কি তা কেনই করি
অবাক সে কারণ?
বন্ধু বলে হার মেনেছি
বাঁধ দিয়েছি মনে
বন্ধু বলেই গোপন করি
কেউ না যেন শোনে।

পাপমোচন

হরিশ বাবু আইন জীবি
ঘরে তাহার নয়টি বিবি।
করছে সে তার জীবন গান
অর্থ কড়ির শেষ বিধান।
মনে মনে করছে পণ
মরণ কালের পাপ মোচন।

আমি মানুষ বেজায় খারাপ
দিনে রাতে পিয়ায় শরাব।
সত্য কথার ধার ধারি না

ঘুষ না খেলে পেট ভরে না।
সকাল বিকাল অফিস ঘুরি
কাজ করি না বাড়ায় ভুড়ি।
ঘুম আসেন রাত্রি বেলা
ভাগ্যে জোটে বউয়ের পেলা।
সুখ নেই'ক হরেক রোগে
পরের পুরুষ যমের ভোগে।
অর্থ কড়ি অনেক হলো-
বাড়ছে বয়স করছে ঢল।
বাঁচব কদিন ভাবছি তাই-
টাকা কড়ির কি উপায়?
মরলে এসব চিতায় দিয়ে
পোড়াস আমায় খাঁটি ঘিয়ে।
শ্রাধ করে ঠাকুর ধরে
অন্ন বিলাস ঘরে ঘরে।
কেউ না রাখিস দুঃখ মনে
ভিক্ষা যাচি জনে জনে।
দয়াল যেন করেন মাফ
আমার সকল জীবন পাপ।

নিয়তি

সময়ের সাথে বেড়ে ওঠা আমি- তোমাদের বহু পর
অথৈয়ের মাঝে থৈ পাব ভেবে নাড়িতেছি দুটি কর।
আমিও এসেছি ভেসে বহুদূর- কাছে কূলে কোথা তীর
তোমাদের মত আমাকে নিতে করে না আত্মীয় ভীড়।
কে আমি? আছে কে আমার? কোথা আছে তারা কৈ?
তোমাদের মত আমিও ফিরেছি- একা কেন চেয়ে রই?
এসে দেখি তুমি, তোমরা আছ পুষ্প শয্যা লয়ে-
আমি কেন একা নীরবে আমার কষ্ট চলেছি বয়ে?
আমি কী অনাথ? পথশিশু আমি- আমার কেউ কী নেই
সজল নয়নে কেঁদে ফি্রি আমি- দুঃখ কা
হারে দেই?
কে লবে আমার জীবনের ভার আঁখি ঝড়া লোনা জল
কে হবে আমার পথের সঙ্গী বিপদের সম্বল?
আমি সদা ফিরি দুর্গম গিরি দুর্জয় পথ বেয়ে-
কেউ তো বলে না কোথায় চলেছি- অচিন পথটি ধেয়ে।
নির্জন পথে তিমিরের রাতে পিছু ফিরে কত চাই
কেউ তো বলুক- কোথায় চলেছি একবার শুধু ভাই।
চাইব না আমি ঠাঁই তব তরে- নিশি যাপনের কথা
বলব না কিছু হালকা করিতে হৃদয়ে জমানো ব্যথা।

আরতি

বাঁধ ভাঙ্গা ঘুম আসবে যে দিন
মরণ কালে সঙ্গী বিহীন
মাটির বিছানায়।
আমায় শুধু গোসল দিয়ে
খোদার কালাম, কালেমা পড়ে
পৌছে দিও আমার ঠিকানায়।

কেউ যেন না পূজা করে
আমায় কভু ভক্তি ভরে
পুষ্প রেখে পায়।

কেউ যেন না আশ্রু ফেলে
ক্ষণিক ভবের মায়ায় তরে
শব্দ করে ভাই।

আমায় শুধু করবে ক্ষমা
আমায় সকল জীবন-গুনাহ
আমার পাপের দায়।
আরেকটু ভাই, আশ্রু ভরে
চাইবে ক্ষমা আমার তরে
খোদার দরগায়।

ইতিকথা

আমি তখনো ছিলাম একা-
যখন মাতৃগর্ভে রক্তপিন্ড।
সেথায় শুনি, পৃথিবী নামক আজব গ্রহে
মানুষ নামক প্রাণীর পাবো দেখা।
আবার আমি একাই হব-
স্বল্প সময় বিশ্ব ঘুরে
সুখ-দুঃখ, নাট্য সেরে
বট বিক্ষের পাতায় আমার বিদায় হলে লেখা।

মাঝখানের এই অল্প সময়-

বিত্তবানের কৃর্তি সেরে
মধ্যমানের বিচার করে
নিম্নমানের আহার কেড়ে
অল্প দামের কাব্য লিখে
মরণ কালে সত্য জেনে
মিথ্যে হলো আমার সকল শেখা।

আমার আবার বিচার হবে
কর্মকালের কার্য ঘিরে।
বিবেকবানের হিসেব কড়া
সবই হবে পরখ করে দেখা।

মিথ্যে আমার জগত সাথী
জীবন কারার পরিপাটি।
পথে কাহার দেখা হলো
মিথ্যে মনে রাখা।

মিথ্যে আমার জীবনবীমা
শেষ হলে মোট কর্মসীমা
কালের জালে পড়বে ধরা
আমার সকল বাঁকা।

কুমারী প্রার্থনা

আমায় মদদ দিক সে আমার স্বপ্ন পুরুষ প্রিয়জন
আমার সকল কান্না-হাসিই থাক বাঁধা তার দেহমন।
আমায় রাখুক সঠিক পথে বিধান দাতা যেমন চান
আমায় যেন দ্বীনের পথে করেন তিনি শিক্ষাদান।
সে যেন হন সত্যবাদী, উদার মহৎ বীর-পুরুষ
আমায় যেন রক্ষা করেন, পাপকে মুছে নিষ্কলুষ।
হালাল পথে রিযিক দিও- সত্য ন্যায়ের সন্ধানে
আমায় তুমি বানাও তাহার প্রেম প্রণয়ী বন্ধনে।
সদা তুমি রেখ তাহার সখানিতে উচ্চ-শির
কবুল কর হে দয়াময়- তাকে তোমার ধর্মবীর।

আমিও পাপী

ঘুম আর ঘুম এত ঘুম কেন? একটু তো নড়চড়-
কবর মিজান হাশরের দিন, আল্লাহকে ভয় কর।
সময় এসেছে আজ-
খোদাকে বলো নত শিরে তুমি- ক্ষমা করো সরফরাজ।
শুধালে কেহ তারে-
বলো, প্রভুকে খুজিতে ছুটিয়া চলেছ তুমি তার দরবারে।

 
তুমি মিথ্যুক তুমি পাপী সে তো আমার দ্বন্দ্ব না।
আমিও পাপী, পাপ মোচনে করি খোদার বন্দনা।
ঘোর পাপী আমি-
পাপের আধাঁরে ডুবে আছি কত কাল।
অভিশাপ যত খোদার জমিনে-
আমি তার জঞ্জাল।
তোমার পাপ তো আমার নিকট সামান্য মনে হয়-
হাশরের দিনে মাথাকাটা যাবে- সদা করি তাই ভয়।
আমি বড় পাপী ভাই-
খোদা যদি মোরে ক্ষমা নাহি করে- নিস্তার কভু নাই।

কবর হাশর পুলসিরাতে- আমার বেহাল দশা-
খোদার মিজানে পাপ পূর্ণ্যে মাফ হবে কশা কশা।
জিন্দেগি মোর শেষ হয়ে এলো- সামান্য আর বাঁকি
খোদা না করুন, শেষ কটা দিন দিই তারে কোন ফাঁকি।
দিন আর রাত- ইবাদতে তার থাকি যেন মশগুল।
আজ হতে যেন খোদা তা'লা মোর হয় না'ক আর ভুল।

এত আলো কেন?

নিভিয়ে দাও সবগুলো আলো
আমি আধাঁরের স্বাদ নিতে চাই
আলোর স্বপ্ন আমায় ক্লান্ত করেছে
বিষিয়ে তুলেছে আমার চারিপাশ।
হতাশা মগ্ন কবি।
নিভিয়ে দাও সূর্য চন্দ্র তারা
ঘুমিয়ে দাও এখনো জাগ্রত যারা।
কোলাহল কান্না এনেছে চোখে-
শ্রান্তির শেষ ঘুম ঘুমাতে চাই।

নিভিয়ে দাও সন্ধ্যার প্রদীপ
আর প্রয়োজন নেই আলো জ্বেলে-
প্রিয় মুখটি দেখার।
কারো আশায় গোধুলির পথ চেয়ে থাকা।

আলো! আলো!! এত আলো কেন?
দিবা স্বপ্ন আমার সব নিয়ে গেছে
রেখে গেছে ক্লান্তির অশুভ ছায়া-
মায়ার বাঁধনে সব নিয়ে গেছে।
ফেলে গেছে- আমি একা।
না ফেরার দেশে অজানার পথে
আধাঁরি আমার ভালো।
আমি চাই না কোন প্রদীপ জ্বালা-
চাই না এত আলো।

নিভিয়ে দাও সবকটি আলো
প্রয়োজন নেই দৃষ্টি মেলার
আমি আধাঁরকেই ভালোবাসি।
আলোর মাঝে দৃশ্যত সবই কালো।

মাছরাঙ্গা এবং প্রেম আরতি

মাছরাঙ্গাটা প্রেম করেছে তাহার সখির সনে
তাই বেচারা সব ছেড়ে আজ হয়েছে ঘরকোনে।
সখি যে আজ জীবন তাহার, সখিই তাহার প্রাণ
এক পৃথিবীর সবকিছু তাই করছে তারে দান।
ভাবনা তাহার সখিটি তার থাকবে সদা পাশে
সখি তাহার পাগলামিতে মুখটি চেপে হাসে।
সে দিয়েছে মনটি তাহার পাশেই যাহার বাসা
নিত্যনিশি যাহার সনে চলছে উঠা-বসা।
মাছরাঙ্গাটা জানলো যখন সব হয়েছে শেষ
ব্যর্থ প্রেমে নিঃস্ব প্রেমিক হইলো নিরুদ্দেশ।

কিংকর্তব্যবিমূঢ়

স্বার্থ কাহার কে লড়েছে কে করেছ জয়?
ব্যর্থতা কার কে বয়েছে কে করেছে ভয়?
কাহার বাজী কে ধরেছে কে হয়েছে লুপ্ত?
আজব মানুষ ভুলে করে শেষ কেনই তবে গুপ্ত?
জন বোঝে না, মন বোঝে না- হঠাৎ করে তাড়া-
হায়রে মানুষ বিবেক তোমার অবাক বুদ্ধি ছাড়া।
কাহার খাবার কে তুলে খায়, কে তুলে দেয় জল?
কাহার মালা কে তুলে নেয়- আজকে আমায় বল।

কোন পথে কার চলার কথা, কে চলে কোন পথে?
হঠাৎ তুমি লাগাম ছাড়া- কাহার বিজয় রথে?
দিন বোঝে না, রাত বোঝে না কখন যে চায় কী?
কেউ জানে কারোর কথা মনের কার্য্যাদি।
হাসতে দেখি চোখ ছলছল- বুঝতে করি ভুল-
কেমন মানুষ বুঝব কিসে পাইনা ভেবে কুল।
আজব মানুষ জড়াও কেন- কিসের মায়া দ্বন্দ্বে
কেনই তোমার জ্ঞান থাকে না নিজের ভালো-মন্দে?

পুলিশ

পুলিশ দেখে মানুষ মারা; পুলিশের কাজ কি?
এইখানে বুঝি পুলিশ নেই'ক ওরাও সন্ত্রাসী।
রক্ষক তারা ভক্ষক হয়ে করে সেবা-শাষন
বন্ধুর মত আচরন নয়- খাটায় অগ্রাশন।
নিজেরাই করে পুকুর চুরি- ক্ষমতার ফরমাশ
রাস্তায় ধরে; লাশ কাটা ঘরে বানায় জীবিত লাশ।
আসামি ধরে আদালতে দেয়; বিচারের কত তাড়া!
বড় বড় সব পাপ কাজ করে উহারাই পায় ছাড়া।
বিচার হয়না আদালতে ওদের; পায়না'ক ওরা সাঁজা-
আইনের ফাঁকে ছাড়া পেইয়ে যায়; সাধারণ হয় ভাঁজা।

প্রেমের কেনাবেচা


সস্তা দরে বস্তা করে বেচবে নাকি প্রেম
খানিক তবে কিনব আমি এমন মজার গেম।

যায় পাওয়া যা টাকার জোরে- বিবেক বিসর্জন!
অবাক হওয়ার নেই'ক কিছু কালের বিবর্তন।

নেই'ক কোথাও গল্প আয়েশ- সুখ মানে যে টাকা
কোথাও নেই'ক প্রাণের প্রণয় একটুখানিও রাখা।

অশ্রু এখন বর্ষা কালে হঠাৎ ঝড়া জল
দুঃখ কথা এখন মিছে; রূপকথা কেই বল।

অর্থ দিয়েছে বিজয় তোমাকে প্রেম দিয়েছে জালা
সভ্যতার কাছে পরাজিত প্রেম পায়নি বিজয় মালা।

জীবনের মূল্য কত?

জীবনের মূল্য কত?
এক তৃষ্ণার্ত পথিক, তপ্ত দুপুর; নির্জন মাঠ।
অথবা মরুভূমির যাযাবর।
আগুনের ফুল্কি ঝড়িয়ে ছুটে আসা-
ক্লান্ত পথিক।
জিজ্ঞাস কর তাকে-
একফোঁটা জলের মূল্য কত?
তত নয়! তার চেয়ে বেশী-
বন্ধা নারীকে বল গর্ভধারণের মূল্য কত?
পুরুষকে বল যে অক্ষম।

জাগো...

আমি বলে দিব আজ সব-
অসহায় আমি সম্বল হারা অভুক্ত দুর্বল।
আমি বলে দিব ওরা ভুল পথে হাটে
বেশ্যাবৃত্তিই পেশা ওদের; মিথ্যা চোখের জল-
ওরা বুনো হায়েনার দল।।

নেশার সাগরে ডুবে আছে ওরা
অসাড়ে চঞ্চল।
প্রভাত আসলেই চলে যাবে ওরা!
মিথ্যে কথা। জনারন্য নয়-

এটা পৃথিবীর ভূগর্ভে লুকে থাকা ভূইঘর।
ওরা মানুষ নয়। মাংসাসী-
আলেয়ার মাঝে ঢেকে রাখা প্রবল সর্বনাশী।
তৃষ্ণা মিটাতে প্রসাব করে পান!
নহে জল।
এ এক কঠিন সত্য কষ্টে বলা-
ওরা বুনো হায়েনার দল।।

ছেয়ে গেছে আমাদের মুক্ত আকাশ
মেঘাচ্ছন্ন আজ
মুছে ফেল তোমার সকল অশ্রু
ঘুচে ফেল সব লাজ।
মুখ ফুটে বলো- ভীতু নয় মোরা
মোরা নয় দুর্বল।
মিথ্যাকে আজ টুটাতে আসেছি
ছুটাতে এসেছি ছল।
ধবংস করেছে মানবতা ওরা-
বুনো হায়েনার দল।।

ভুল বলা

এখন যতই মুখে বল
মরণ তোমার চাই-ই চাই
আসলে মরণ খুজবে তখন
বেঁচে থাকার সব উপায়।

ভাববে তখন একটি সকাল
নিত্য যেমন আসে
আরেক সকাল আসুক তেমন
হিমেল হাওয়ায় ভেসে।
আসুক একটি সোনার রবি

ঝলসে দেওয়া আলো
আধাঁর রাতের শেষ সে কোথায়-
পূর্ণিমাটাই ভাল।
আরেক শীতে দেখতে চাওয়া-
শিশির কণা ঘাসে।
শেষ বিকেলের মুগ্ধ আয়েশ
ক্ষণিক কারোর পাশে।
আরেকটা শেষ বরষা ঠেলে-
শরত যেন আসে।
আবার ক্ষণিক মন হারাতে
ফুটন্ত সেই কাঁশে।
বসন্ত যে আসবে কবে
বেজায় ভালোবাসি।
আসত যদি আরেক ফাগুন
আমায় দিতে হাসি।

আমি একা নই

তুমি মুখ ফিরিয়ে নিলে?
ভেবনা আমি একা হয়ে যাব।
পৃথিবী অনেক বড়- সীমাহীন।
আরেকটি নতুন পৃথিবী হবে আমার।
আরেকটি চাঁদের আলোয় গা ভাসাব।
আরেকটি সূর্যের ঠিকরে পড়া রোদে কান্না শুকাব।
একটা রাত ঠিকই আসবে স্বপ্ন দেখার-
একটা প্রভাতে ঠিকই আমি সতেজতাকে উপভোগ করব।
ঠিকই একটা বরষা আসবে আমার কাদা মাখা গা ভেজাতে।
আর একটা বসন্ত আসবে-

আমার প্ললবহীন বৃক্ষে সজীব পাতা গজাতে
ফুল ফুটাতে, ফল ফলাতে... মন ভরাতে...
আমি সেই বসন্তের আশায় বুক পেতে আছি
হাজার বছরের লালিত স্বপ্নকে সফল করতে।

কথা ছিল

তুমি আমায় ঘুম পারাবে-
ঘুমা ভাঙাবে আর;
জোসনা রাতে চাঁদ দেখাবে-
দুঃখ কমাবার।
এখন তুমি একাই ঘুমাও-
একাই জাগো দেখি;
সবপ্ননীড়ে এখন তুমি
আর ডাকোনা পাখি।
কোথায় তোমার মধুর কথা?
কোথায় তোমার মন?
এখন তোমার বৃক্ষবিহীন-
উজাড় কেন বন?

আল-বিদা

তোমার উদর আমার প্রথম আবাস-
সেথায় ছিলাম দশটি মাস।
তুমিই বেশি বুঝতে পার আমার মন-
কেবল আমি বুঝাতে পারিনা তোমায়-
আমার মনের কথা; মনের মতন।।

তুমি ত জান- আমার মনের কথা-
কিসের বাড়ে আমার ব্যথা।
কেবল আমিই বুঝতে পারিনা-
মাগো করো ক্ষমা।

মাফ করো- অবুঝ মনের কথা।।

তোমার রক্ত করেছি পান।
জন্মেছি আমি যবে; তারো বহু আগে-
আমি কিছুই ছিলাম না।
রক্তও না, মাংস না।
কেউ জানে না ছিলাম কি?
কোথায় ছিলাম? এবং কোথায়?
আবার শেষ কোথায় হারাব?
কোন অসীমে? অজানায়।।

আমি ঋণী। অনেক বেশি।
আমার একমুঠো হাসি-
প্রথম যেদিন কান্না মুছে হাসি।
তুমিই প্রথম বুঝেছ; কেন?
আমার তৃপ্তি তোমার জানা-
অকারনে হাসার কারণ
আর কেউ জানে না।
জানবে না কোনদিন।
আরেক মা আমার আছে!
শুধু জানিনা কত ভালোবাসে।
সে তোমারও মা; সকলের!
সেথায় থাকব বহুকাল
হয়তো সেথাকার জঞ্জাল আমি।
ভালোবাসা অথবা স্নেহ নয়-
যেভাবে তোমার উদয়ে আবির্ভাব-
আমি সেখানে হব ক্ষয়।
আমার রক্ত মাংস হাড়-
আমাকেই সে করবে পানাহার!

আমার সেই মা আমাকে চায়!
আমাকে টানছে কাছে?
আমি নিরুপায়; ক্ষমা করো-
ফিরব না কোনদিন!
বলো আল-বিদা; বলো বিদায়।

একটুও ফেল না'ক জল।
সঞ্চার করো বল। আল-বিদা।

অনুরোধ

তুমি এসেই কেন চলে যাও?
তুমি অপেক্ষা করোনা বলেই আমি বেশি অনুভব করি?
জানোই তো! প্রত্যাশার চেয়ে প্রাপ্তি কম হলেই- মুল্য বড়ে।
আমি যতই অপেক্ষা করি- ততই মন কাড়ে।

ব্যাপ্তির স্বপ্ন আর কল্পনা আমকে ঘিরে থাকে-
ভাবি তুমি নিষ্ঠুর; সংকীর্ণ তোমার মন।
আমি গুরুত্বহীন; জানি আমার জন্য আসো না।
কিন্তু একদিন ঠিকই আসবে। আজীবন।
সেদিন আমার আসা। সামান্য হতাশা তোমার-
ভেবনা হারিয়ে যাব। অসীমে।
হারাবই হয়তো; সামান্যক্ষন।
চায় যদি একটু মন।
জানোই ত সহজে ধরা দেওয়ার মানে।
আমি ভালোবাসি। তুমি জান আর আমার মন জানে।

কেন জানি কিসের এক টান-
হৃদয় ধরে টানে।
আমি অনুভব করি-
অভিকর্ষ না মহাকর্ষ। কে জানে?
দুর্বার নয়। সামান্যও বলবনা-
এখানে কোন সুত্র মানে না-
কি তার মানে- আমি জানি না।
হয়তো কেউ জানে তার- লুকানো মানে-
আমি জানি না;
আমার মন জানে......
আমার মন জানে......

তুমি

তুমি হাসলেই বুঝতে পারি- হাসিতেও আছে সুখ।
তুমি হাসলেই অনুভব করি- কতটা ভরেছে বুক।

শুধু দুর্বোধ্য তোমার ভাষা-
আমি আশাহত প্রায়; হারিয়ে ফেলেছি আমার সকল আশা।
মুছে ফেল তোমার অশ্রু ঝড়ানো জল-
তোমার চোখের অশ্রু আমায় করে যায় দুর্বল।
আমি সইতে পারিনা ভারি-
মুছে ফেল সব অশ্রু তোমার- পাতবনা কভু আড়ি।
তোমায় হয়নি জানা-

সেইদিন হতে জানতে চাইনি; করেছিলে যবে মানা।
করিনি রুদ্ধ একটুও আমি- তোমার চলার পথ-
তাই বলে কভু ভেবনা'ক তুমি- দৃষ্টি করেছি বধ।
দুর থেকে তবু চেয়ে দেখি তুমি- তোমাদের পথ চলা।
মুগ্ধ হয়ে চেয়ে দেখি আমি- তোমাদের ছলা-কলা।

২০.০২.২০১২

তুমি জানোই না- ক্ষমা মানে তবে কী?

ক্ষমা মানে নয় দূরে সরে যাওয়া-দূর থেকে গালি দেওয়া।
ক্ষমা মানে নয় ভুল বুঝে থাকা- কিছু না বুঝতে চাওয়া।
ক্ষমা মানে নয় আড়ালের উঁকি- দৃষ্টি ফিরিয়ে নেওয়া।
ক্ষমা মানে নয় মুখে হাসি চেপে-কটাক্ষ করে যাওয়া।
ক্ষমা মানে নয় বলে যাওয়া কিছু- নিষ্ঠুর স্বরে কথা।
ক্ষমা মানে নয় ব্যথাতুর মনে যোগ করা আরো ব্যথা।
ক্ষমা মানে সব কষ্ট ভুলে- অন্যকে দেওয়া বর।
ক্ষমা মানে সব অতীত ভুলে- বন্ধু হও
য়া নির্ভর।

তুমি ক্ষমাই করোনি জানি-
তাই যদি হয়; এত কিছু কেন? আজো কেন অভিমানী?
কতখানি ছিল ভুল?
কতখানি ভুলে; ক্ষমা করে দিয়ে- করা যায় নির্মুল।

পড়া

বাবা! আমি আর করবনা লেখা পড়া!!
সব পারি আমি; সব করে দিব- এইখানে শুধু ধরা!!!

কত তো করেছি বারণ-
মানলে না তুমি; শুনলে না কভু আমার ভয়ের কারণ।
ঘুম আসেনা'ক রাত্রিবেলা- প্রতিরাতে আসে জ্বর।
বলা-ই হয়নি, EXAM শুনে বুক করে ধড়ফড়।
"স্যার" শুনে তা
ই মনে পড়ে যায়- ক্লাসের কত কথা
কত লিখেছি; আর কত লেখা- দিস্তা দিস্তা খাতা।
সমাপনী শেষে সব দেই বেঁচে; পড়ব না বলে তাই-
বই দিয়ে সব লকার ভরেছি- একটুও ফাঁকা নাই।
বলতে পারি না কষ্টের কথা- চারটি বছর শেষ।
আর কত পারি মন ভালো রেখে- একটু তো চাই রেশ।
কষ্ট মুছে- মন থেকে শেষ হেসেছিনু যেন কবে?
আরেকটা বেশ হাসব হাসি- পড়ালেখা শেষ যবে।

বাংলার রূপ

আমি বাংলা মায়ের আঁচল আমার অংগে জড়াই-
বাংলা বধুর অঢেল রুপে নয়ন জুড়াই।
বাংলা ভাষার মিষ্টি কথায় মনকে ভরি-
আমি বাংলা দিয়ে মনের মাঝে স্বপ্ন গড়ি।
বাংলা আমার সূর্যদয়ে রাত্রি শেষের ভোর-
বাংলা আমার বেঁচে থাকা; স্বপ্ন-রেখা তোর।
বাংলা আমার পল্লী বাউল; আঁতকে ওঠা গান-
বাংলা আমার নীথর দেহে হঠাৎ জাগায় প্রাণ।

মুক্তি দে

আমি বীর, আমায় রুখে কে?
লোহার শিখলে বাঁধা দুই হাত,
বন্দী শিবিরে; আটা চৌকাঠ-
আমায় মুক্তি দে।

এখানে আলো নেই; অন্ধকার।
জানালার উপারে দিবাকর হাসে
যেখানে দৃষ্টি হারায় দূর আকাশে-
আমি বাঁধা, বাঁধা দ্বার, আটা চৌকাঠ;
আমায় মুক্তি দে।

এখানে জল নেই, উপারে জল প্রপাত-
তাঁরা নেই; জোনাকির আলো
ঘুম নেই চোখে, দেখি সব কালো-
আসেনা'ক রাত শেষে সুপ্রভাত।
আমায় মুক্তি দে।

এখানে প্রাণ নেই; আছে প্রাণহীন কাঠি-
উপারে জীবনের মেলা, সশব্দ হাসি।
অসীমের শেষ বহু কাছাকাছি।
আমি বন্দি শিবিরে, আটা চৌকাঠ
আমায় মুক্তি দে।

চাইনা করুণা বাঁচতে আবার; প্রবঞ্চনার মাখামাখি-
দাও খুলে দ্বার; দেখি শেষবার পৃথিবীর মধু-হাসি।
বলে যাই তারে আমি শেষবারে; আমার বিদায়-
আসব আবার নতুন আমি; ঘুচাতে আমার দায়।
আমায় মুক্তি দে, আমায় মুক্তি দে।